এই গানটি আমাদের বন্ধুত্ব, পরিবার, সংগ্রাম ও ভালোবাসার এক অনুভূতিপূর্ণ গল্প। অনিমেষ দত্ত বা অনির জীবনের বিভিন্ন মুহূর্ত উঠে এসেছে এখানে—কিভাবে সে প্রতিদিনের চাপের মাঝে নিজের পরিবারকে সময় দেয়, কিভাবে সে কঠোর পরিশ্রম করে জীবনের কষ্টগুলো সহ্য করে এবং পরিবারের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা। গানটি শুধু এক ব্যক্তির জীবনের কাহিনি নয়, এটি একজন সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রাম, যাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের পরিবারের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে প্রতিদিনের লড়াই লড়ে যাচ্ছেন। Oldboy এর মুডে, DEYMon এর প্রোডাকশনে এবং অসাধারণ মিক্সিং-এ সাজানো এই বাংলা র্যাপ গানটি শুনে আপনি অনুভব করবেন ভালোবাসার গভীরতা ও জীবনের বাস্তবতা।
- Song: Ani( অনি)
- Artist: Oldboy
- Produced:deymongram
- Cover Art: ebhereonthemic
- Mixed and Mastered: realsuge
- Recorded: admaer_j
Ani অনি | Offical Bangla Rap Video Song| Oldboy |Bangla Lyrics| prod. by DEYMon |
Ani( অনি) song lyrics in Bengali:
আমার বন্ধু সেই অনিমেষ দত্ত, তার ডাক নাম হল 'অনি', স্ত্রী 'দিশা', ছেলে 'অর্ক' সেই কলেজ থেকেই জনপ্রিয়, কত মহিলা ভক্ত, তার কণ্ঠে ছিল গান, চোখে শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন সেই খামখেয়ালী ছেলে আজকে চাকরি জীবনে মগ্ন, রোজ alarm বাজার আগেই ঘুমটা ভাঙায় ছেলে অর্ক আর ব্রেকফাস্ট এর টেবিলে শোনে ছেলের স্কুল এর গল্প, কারণ তারপর তার শার্ট প্যান্ট পরে অফিস ছোটার পর্ব আর টিফিন বক্সটা হাতে দিয়ে দিশা ধরায় ফোর্দ কারণ সেও জানে প্রেমিক তার ভুলে যায় অল্প "সবটা বাজার করে আনবে" দিশা বলতে ব্যস্ত, একটু হেসে ফেলে অনি, সেও যে বউ এর কাছে জব্দ বাইকটা পার্ক করে অনি বাস স্ট্যান্ডে ছুটে যায়, তেল এর খরচা বাঁচাতে সে বাসে ঝুলে ঝুলে যায় হাসিমুখে ভিড় বাসে লোকের ধাক্কা গালি খায় তাও এক কালের কমরেড আজ চুপচাপ থেকে যায় বস এর কাছে রোজ কত গালি শোনে তবু মুখটা চেপে লড়ে যাতে প্রমোশন টা জোটে আর পা-টা চাটতে পিছুপা হয়না কোনমতে, বললে ওভার টাইম ও করে, appraisal-এ টপ স্কোরে আর Self Esteem মানে কি ভুলে গেছে ছেলে, সে যে হাসতে শিখে গেছে পরিবারের হাসি দেখে, আর কাজের পরে cigerrate টা আজকে নেই যে ঠোঁটে, ছেলের কাছে করা প্রমিস অনি ভাঙবে কোন সাহসে?! ফোন বাজছে.. hello বাবা! বাড়িতে কখন ফিরবে? মা চিলি চিকেন করেছে! দেখি বাবু, ফোন টা দে এই তুমি কখন আসছো? বাজার করে অনি ওঠে সাতটার বাসে, আধ ঘন্টা কেটে গেলো বসার জায়গা পেতে পেতে আর মুখে ঠান্ডা হাওয়া লাগায় ঘুম আসে তার চোখে এই ক্লান্ত দেহ চায় তার একটু জিরিয়ে নিতে দেহ শান্ত হলে একটা ঝড় আসে তার মনে, এই অর্ক কে নিয়ে চিন্তা সে যে খুবই বেশি করে দুবার miscarriage এর পর অর্ক এসেছিল কোলে, মনে ভয় টা থাকায় দিশা ছাড়ল চাকরি জোর করে দিশার কোল ফাঁকা হওয়ায় তার মুখের সেই অন্ধকার, আজও আসে অনিমেষ এর দুঃস্বপ্নে বারংবার! অর্ক শুধু সন্তান না তার জীবনে জাদুকর, ফিরিয়েছিল দিশা কে সে অনির কাছে আরেকবার দিশা অনির স্বপ্ন অর্ক কেই জুড়ে, আজ যতই হোক না fees সে যায় number one স্কুল-এ আর অর্ক বাপের ব্যাটা কিছু চায় না মুখটা ফুটে, সেও যে বোঝে বাপ প্রতিদিন কত যুদ্ধ লড়ে। আর ফার্স্ট বেঞ্চের এর ফার্স্ট গার্ল টা করেছিল বিয়ে আমার ভাইকে যখন বেকার সে বাড়ির সাথে লড়ে সেই মেয়ে চালাতো ঘর অনিমেষ ভুলবে কি করে? তার দিশা ছিল তারই পাশে ভালবাসার জোরে! আর বাড়ির লোক মুখ ফেরালো অর্ক-র মুখ দেখেও, তাদের মন গলাতে পারলনা অনেকবার পায়ে পরেও এই দিশা চোখের জল মুছে অনির হাতটা ধরলো, আমার অনাথ ভাইয়ের সাথেই সেই মেয়ে সংসার করলো! এই যে দাদা! দাদা ভাই! হ্যাঁ... এইযে কালীঘাট চলে এসেছ কিন্তু ও হ্যাঁ এসে গেছে..?! বাসের থেকে নেমে বাইকে করে বাড়ি, ছেলের মুখটা দেখবে ভেবে অনি মনে মনে খুশি আর বাড়ি ফিরে main গেট টা খোলা দেখে অনি অল্প রেগে বলে, "দিশা দরজা লাগাওনি কেন তুমি?" দিশা দাঁড়িয়ে হাসে রেখে একটা হাত কানে, আর পিছন থেকে অর্ক এসে কোলে উঠে পড়ে সে যে হাসতে হাসতে বাবাকে তার স্কুল এর গল্প বলে, "বাবা আজকে গোল করেছি বাঁ পায়ে shot টা মেরে! আর বাপ ব্রাজিল হলেও ছেলে ভালবাসে মেসি, তাই বাবার দেওয়া জার্সিটার যত্ন একটু বেশি আর বাপ ব্যাটার গল্পের মাঝে, খাবার টেবিল রেডি, দিশার হাতের চিলি চিকেন মানে চাই এক্সট্রা গ্রেভি এই চাঁদের হাট বসে তাদের ছোট্ট একটা ঘরে, এই মুহূর্তটার জন্য অনি কাজ কে পুজো করে এই ভালবাসার বন্ধন তাকে সাহসী করে তোলে, এই পরিবার এর জন্য অনি কি না করতে পারে! আর শুতে যাওয়ার আগে অনি গীটার নিয়ে বসে, তার কণ্ঠে গান দিশা অর্ক খুবই ভালবাসে। এই ঘুম পারানি গান শুনে তারা ঘুমিয়ে পরে, এবার Lights Off কারণ কালকে অফিস যেতে হবে। "জীবনে ভাই আর কি চাই?" অনি শুয়ে ভাবে, এই অভাব দেখে আসা ছেলে রাজা হলো কবে? রাত টা আরো বাড়লে সে যে নিজেও ঘুমিয়ে পড়ে কিন্তু হঠাৎ তার মাঝ রাতে কাঁচা ঘুমটা ভাঙ্গে! নাকে তে তার আসে একটা পচে যাওয়ার গন্ধ, সে উঠে বসে লাইট টা জ্বালায়, ঘাম হয় তার বড্ড দেখে দিশা অর্ক নেই পাশে শুয়ে খাটে তার, ছটফট করে হাত পা ছোড়ায় হাতে কিছু লাগলো। যেটা পরল যখন মেঝেতে এলো কাঁচ ভাঙার শব্দ, অনি চতুষ্কোণ জিনিস টাকে মেঝে থেকে তুলল। একটা হাত দিয়ে তা ঘষে সরালো কাঁচের দুটো টুকরো, দেখলো ফটোফ্রেম-টাতে ছবি দিশা এবং অর্ক-র। পৃথিবীটা যেন ধ্বংস হলো চোখের সামনে, তার চিৎকার করা আর্তনাদ না অট্টহাসি বলবে। সেই গলা ফাটিয়ে কান্না, নিজের গায়ের চামড়া খামচে, নিজের চুলের গোছা ছিঁড়ে, দেয়ালে মাথা নিজের ঠুকে! বিছানা থেকে নেমে অনি গেলো মাঝের ঘরে, দেখলো পচে যাওয়া খাবার টেবিলে দুটো প্লেট ভরে আর পোকা খাওয়া সবজি পরে পুরো মেঝে জুড়ে, এই পরিবেশ টাই ভুতুড়ে, এখানে মানুষ কি করে বেঁচে?! মাশ ছয়েক আগে শেষ রোববারের কথা, সেই বাইক এ চড়ে দিশা, অর্ক, অনির ঘুরতে যাওয়া। সেই সিনেমা দেখে ভালো মন্দ খেয়ে মজা করা, আর বাড়ি ফেরার সময় সেই ঘটনা হয়ে যাওয়া। অনিমেষ এর দোষ কি? সে ট্র্যাফিক আইন মেনে ছিল, মানলো না সেই ট্রাক ড্রাইভার সাইড থেকে এসে মেরে দিলো ছিটকে গিয়ে পরল অনি কিছু মিটার দূরে, মাথার চোটে জ্ঞান হারালো, গেলো সব ভুলে! জ্ঞান ফেরায় হাসপাতালে জানতে পারল সে, তার দিশা অর্ক Spot Dead, বডি আছে মর্গ এ! সেই কথা মানতে পারল না আমার বন্ধু অনিমেষ, সেই বাস্তব কে মিথ্যা ভেবে পাগল হলো সে! সকাল বেলায় Main গেট খোলা রেখে কোথায় চলে যায়, শার্ট প্যান্ট পরে কাধে bag নিয়ে ছেলে ঘুরে বেড়ায়। নিজের সাথেই কথা বলে, রাতে একই গানটা গায়, বাড়ি ফেরার টাইমে এক বস্তা বাজার আনে ভাই! প্রতিবেশী ঠাট্টা করলে অনি নিজেও হাসে, তারা বলে ওই পাগল টা রোজ মাঝরাতে কাঁদে! আমরা বন্ধুরা তাকে সাহায্য করতে গেলে মারতে আসে বলে আমরা নাকি হিংসা করি তার সুখী পরিবার কে! বাস্তব কে অনিমেষ ভয় পায় যে খুবই, আমার রকস্টার বন্ধু আজকে মানসিক রুগী কিন্তু বিশ্বাস তার অটুট আলো জ্বলবে দেখে নিশি, সকাল হলেই ফিরবে তার দিশা অর্ক ঠিকই! বাবা! ও বাবা! ঘুম থেকে ওঠো অফিস যেতে হবে তো! এই! ওঠো তো..! চা রেডি করে দিয়েছি শ্রী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন→"এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্তটাই পরিপূর্ণ সত্য, মিথ্যার অস্তিত্ব যদি কোথাও থাকে, তবে সে মনুষ্যের মন ছাড়া আর কোথাও না।"
0 Comments